ক্রোয়েশিয়ার রাজধানীর রেল ষ্টেশন – ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে বর রেলস্টেশন, ক্রোয়েশিয়ার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার কেন্দ্র – তাই, সাধারণত ভিড় থাকারই কথা – কিন্তু এক রাজধানী শহরের আন্তর্জাতিক রেল ষ্টেশন যে এই রকম খালি খালি থাকতে পারে, তা নিজের চোখে না দেখলে হয়তো বিশ্বাসই হতো না।
নিও-ক্লাসিক্যাল স্টাইলে তৈরি এই রেলস্টেশনের বিল্ডিং জাগ্রেব শহরের এক অন্যতম টুরিস্ট গন্ত্যব্যও বটে। শহর কেন্দ্রের একটু বাইরে, যা অতি সহজেই নজর কেড়ে নেয়।
অতীতে, জাগ্রেবের এই রেলস্টেশনটি, ইউরোপের ঐতিহাসিক ও আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার ট্রেন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের এক অন্যতম ষ্টেশন ছিল, এখানে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস থামতো। বর্তমানে এই রেলস্টেশন থেকে ইউরোপের অনেক রাজধানী শহরে যাওয়া যায়। ষ্টেশনের ইন্টারন্যাশনাল কাউন্তার থেকে টিকিট কেটে নিয়ে ট্রেনে বসে পড়লেই হল – সকাল হবে অন্য এক দেশে।
ষ্টেশন থেকে বেরিয়েই শহর কেন্দ্রে যাওয়ার ট্রাম পাওয়া যায় – টুরিস্টদের জন্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা সবই নিখুঁত বলা যায়। আবার, এই রেলস্টেশন থেকে বেরিয়ে, দুপুরের ক্রয়েশিয়ান সামারের উষ্ণ রোদ্দুর পিঠে মেখে নিয়ে, হাঁটতে হাঁটতেই শহর কেন্দ্রে পৌঁছে যাওয়া যায়।
কোন এক দুপুরে, হঠাৎ-ই মনে কোন এক দেশের এক ছোট্ট নির্জন সুন্দর রেল ষ্টেশনের ছবি ভেসে ওঠে – ছবির মতো সাজানো এক রেল স্টেশন। মনে হয়, এমনি তো ছিল সেই দুপুরের রঙটি। কোন এক দেশের অচেনা এক রেল ষ্টেশনে নেমেছিলাম, অন্য এক অচিন দেশে পৌঁছে গিয়েছিলাম, ভিড় ছিল না এক্কেবারে। যে কয়েকজন মানুষ নেমেছিল সেই ষ্টেশনে – সবাই তো ছিল অচেনা, ভাষা ছিল অজানা।
কিন্তু, নতুন দেশকে দেখার নেশায় মন ছিল মগ্ন। কোথায় যেতে হবে, কোন দিকে যেতে হবে – সবই তো অচেনা – এই যে অচেনাকে জানার এক অদ্ভুত অনুভূতি, সেই অনুভূতিই যেন জীবনকে বার বার নতুন করে দেয়। নতুন ভাবে বাঁচায়। কোন এক নতুনকে গ্রহনের আগ্রহই যেন জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়।