অপরাধএক্সক্লুসিভজামালপুরবাংলাদেশ

জামালপুরে মা-মেয়েকে হত্যার কারণ ধর্ষণে ব্যর্থতা

‘ধর্ষণে ব্যর্থ’ হয়ে জামালপুরের মেলান্দহে মা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আনোয়ার হোসেন নামের (৩৬) এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, তদন্তে গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে ঘটনার যোগসূত্র পাওয়া যায়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছেন।

সিআইডি বলছে, আকলিমা আক্তার স্বপ্নার সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো অটোরিকশাচালক আনোয়ারের। তিনি মাস আগে স্বপ্নাকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে অটোরিকশা বিক্রি করে নিজ এলাকায় চলে যান। কিন্তু বিয়েতে রাজি ছিলেন না স্বপ্না। এরইমধ্যে একাধিকবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন আনোয়ার। সবশেষ ১ জানুয়ারি ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে স্বপ্না ও তার মাকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান আনোয়ার।

মুক্তা ধর বলেন, আনোয়ার নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। ওই সময় তিনি ফোনে স্বপ্নার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন। হত্যাকাণ্ডের ২০-২৫ দিন আগে তিনি স্বপ্নার বড় ভাই জহুরুল চৌধুরীর নির্মাণাধীন বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ নেন। রাতে সেখানেই থাকতেন। সেদিনের নির্মাণকাজ শেষে হলে জহুরুলের মা জয়ফুল তাঁদের মা–মেয়ের জন্য মাথাব্যথার ওষুধ আনতে আনোয়ারকে বাজারে পাঠান। সন্ধ্যার পর আনোয়ার ওষুধ নিয়ে এসে স্বপ্নার সঙ্গে গল্প করতে থাকেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, রাতের খাবার শেষে স্বপ্না আনোয়ারের কাছে ওষুধ চান। তখন তিনি ঘুমের ওষুধকে মাথাব্যথার ওষুধ বলে খেতে দেন। ওই ওষুধ খেয়ে মা–মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে আনোয়ার অচেতন স্বপ্নাকে কোলে করে পাশের কক্ষে নিয়ে যাওয়ার সময় জেগে ওঠেন স্বপ্না। শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে আনোয়ারকে বাধা দেন স্বপ্না। একপর্যায়ে আনোয়ার ঘরে থাকা ধারালো বটি দিয়ে স্বপ্না ও তাঁর মা জয়ফুল বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর দরজা বন্ধ করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান তিনি।

১ জানুয়ারি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে জয়ফুল বেগম (৫০) এবং তাঁর মেয়ে আকলিমা আক্তার স্বপ্নার (৩২) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জয়ফুল বেগমের তিন ছেলে ওমানপ্রবাসী। তাঁদের মধ্যে এক ছেলে জহুরুল চৌধুরী সম্প্রতি দেশে ফেরেন। ঘটনার দিন জহুরুল ও তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না।

জহুরুলের অন্য দুই ভাই ওমান থেকে ফোন করে মা-বোনকে না পেয়ে তাঁদের মামা মানিক মিয়াকে বিষয়টি জানান। তিনি বোনের বাড়ি গিয়ে দরজা- জানালা বন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ঘরের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দুজনের মরদেহ দেখতে পান। পরে মানিক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মেলান্দহ থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে জহুরুল ও তাঁর স্ত্রী পুলিশের হেফাজতে আছেন।

আরও পড়ুন:

Back to top button
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে ‘হানি ট্র্যাপ’ শিলাস্তি রহমান ‘Pushpa 2’ is coming to Bangladesh in Hindi ইব্রাহিম রাইসি যেভাবে ৫০০০ মানুষকে হত্যা করেছিলো Bangladeshi mountaineer Babar Ali climbs Mount Everest