আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুর্কি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সাবাহ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই হত্যা করা হয় সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে। খুনের পর মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। পাঁচটি স্যুটকেসে ভরে সেই টুকরোগুলো নিয়ে যাওয়া হয় সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায়।
রবিবারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডেইলি সাবাহ জানায়, সৌদি থেকে ১৫ সদস্যের যে হিট স্কোয়াড বা ঘাতক দল এসেছিল তাদের মধ্যে মাহের আবদুলআজিজ মুতরেব, সালাহ তুবেইগি ও সায়েরুল হারবি খাশোগির দেহ টুকরো টুকরো করেছে। এরপর তারা স্যুটকেসে করে টুকরোগুলো কনস্যুলেট ভবন থেকে সরিয়ে নেয়।
মাহের আবদুলআজিজ মুতরেব সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সরাসরি সহকারী, তুবেইগি সৌদি সামরিক বাহিনীর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান। সায়েরুল হারবিকে গত বছর সৌদি রাজকীয় গার্ড বাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত করা হয়। জেদ্দায় যুবরাজের বাসভবনের নিরাপত্তায় পারদর্শিতার পুরস্কারস্বরূপ তাকে এ পদে উন্নীত করা হয়।
এক সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিকাল ৩টার পর ঘাতক দলের ওই তিন সদস্য একাধিক গাড়িতে করে কনস্যুলেট ভবন থেকে ২০০ মিটার দূরত্বের সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায় যায়। এর দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সহকারী মুতরেব।
এদিকে খাশোগির দেহ টুকরো টুকরো করার পর তা এসিডে গলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন তুরস্কের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। তুর্কি প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইয়াসিন আখতায় বলেছেন এটাই ‘একমাত্র যৌক্তিক উপসংহার’।
প্রথমে অস্বীকার করলেও ঘটনার প্রায় ১৭ দিন সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, ১৫ সদস্যের একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিয়ে ভুলবশত হত্যা করে ফেলেছে।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান অবশ্য খাশোগিকে ‘বিপজ্জনক ইসলামপন্থী’ বলে উল্লেখ করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে। খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করার আগেই হোয়াইট হাউসে ফোন করে যুবরাজ এ কথা বলেছিলেন। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ এই মন্তব্য করা বা হত্যাকাণ্ডে রাজপরিবারের কারও জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।