ঈসপের গল্পগুলি এমন কেন?

সম্ভবত পৃথিবীজুড়ে ঈশপের গল্পগুলি খুবই জনপ্রিয়। এমনকি শিশুদের জন্য চাইনিজ গল্প পড়তে গিয়ে দেখি সেখানেও basically ঈশপের গল্পগুলির আরেক ধরনের রুপান্তর মাত্র। মানে গল্পের moral lesson একই কিন্তু উপস্থাপন একটু ভিন্ন। কিন্তু আমি কেন জানি ঈশপের গল্পগুলির উপস্থাপনায় সন্তুষ্ট হতে পারিনি। অধিকাংশ গল্পের পরিনতিতে মেরে ফেলা হয়েছে কাউকে না কাউকে। অনেক সময় ভালো চরিত্রটিও মরেছে আর দুষ্ট চরিত্রেরতো কথাই নাই। আমার আপত্তি মূলত মেরে ফেলার পেছনে। তাও আবার মরে যাওয়ার পদ্ধতিগুলিও স্বাভাবিক মরে যাওয়াও নয়। কোথাও পেট ফেটে মরে যাওয়া, কোথাও খাবার খেতে খেতে মরে যাওয়া, কোথাও পিটুনি খেতে খেতে মরে যাওয়া, কোথাও অনেক উপর থেকে ধপাস করে পড়ে মরে যাওয়া, কোথাও ডুবে দম আটকে মরে যাওয়া ইত্যাদি নানা প্রকারের বিভৎসভাবে মরে যাওয়া। আমি কিন্‌তু এটা একদমই বলছিনা যে ঈশপের গল্পগুলি আমার ভালো লাগেইনা। অধিকাংশ সময় পরিণতিটা মৃত্যুর মাধ্যমে না টানলেও হয়তো হতো। আর বিভৎস মৃত্যুর তো প্রশ্নরই আসেনা।

যে কারনে ঈসপের গল্প নিয়ে লিখছি তা এই যে, এই গল্পগুলিই কিন্তু আমাদের কোমল শিশুদের শোনাই। বাজারে নানা ভার্সনের ঈসপের গল্পের বই পাওয়া যায়। বিভিন্ন লেখক ও প্রকাশক এগুলিকে নানা ভাবে সংগ্রহ করে ছবি ও রং দিয়েও প্রকাশ করেছেন। যদিও আমি জানিনা প্রকৃত গল্পগুলিও কি ঠিক তাই ছিলো যা এখন বই আকারে পাই? নাকি যুগে যুগে বিকৃত হতে হতে এখন চরিত্রগুলির পরিনতি বিভৎস মৃত্যুর পর্যায়ে চলে এসেছে?

যাই হোক, আমি যখন গল্পগুলি কোন শিশুকে বলি, পরিনতিটা একটু ভিন্ন করেই বলি। আর সেভাবে বলায় গল্পের মোরাল লেসনের কোন বিঘ্নই ঘটেনা। আমার মনে হয় শিশুর বয়স যদি নিতান্তই অল্প হয় তবে এভাবে এই গল্পগুলি হুবহু না বলে একটু ভিন্ন করে উপস্থাপন করুন। যদি ভয়/violence-এর দৃশ্য বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর বলে মানি তবে আমার মনে হয় বিভৎস মৃত্যুর বর্ণনাযুক্ত গল্পও ক্ষতিকর হতে পারে।

তবে গল্পগুলি অবশ্যই বলবেন। গল্পগুলির প্রয়োজন হয়তো এখনও শেষ হয়নি। নানা ধরনের শিশু উপযোগী গল্প বাচ্চাদের শোনানো দরকার। গল্পবলা নিয়ে আরো কিছু কথা আগামী সপ্তাহে না হয় লিখবো। সবাইকে শুভেচ্ছা।

ছবি নেট থেকে সংগ্রহ করা।


যদি এই লেখার বক্তব্য ভালো লেগে থাকে এবং যদি প্যারেন্টিং বিষয়ে আরো আলোচনা করতে চান তবে Facebook Group-এ যোগ দিন। এই গ্রুপে আমরা প্রধানত বাংলায় আমাদের সন্তানদের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে থাকি।


আর যদি হাতে একটু সময় থাকে ২-৪-৫-১০ মিনিটের কিছু ছোট ছোট video clip দেখবার তবে অবসরে চা/কফি খেতে খেতে আমার YouTube Channel টি ভিজিট করতে পারেন। আমার বিশ্বাস এই Channel টির অধিকাংশ video clip আপনার পছন্দ হবে।


No reproduction of this article may be made including electronic or paper reproduction without the express written consent of the author.


এটি একটি ফ্রি ব্লগ সাইট। এ কারণে wordpress এই পোস্টে বিজ্ঞাপন (advertisement) দেখাতে পারে। বিজ্ঞাপনে যা কিছু দেখা যাবে সেগুলির জন্য আমি দায়ী নই।

This entry was posted in কথা বলা, শিশু, শিশুরযত্ন and tagged . Bookmark the permalink.

1 Responses to ঈসপের গল্পগুলি এমন কেন?

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান